মানুষ শুধু আমার সাফল্যটাই দেখে: মাজিদি
ইরানি চলচ্চিত্র নির্মাতা মাজিদ মাজিদি'র এ সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন গ্লোবাল টাইমস-এর একজন সাংবাদিক। সাক্ষাৎকারটি এখানে অনুবাদ করা হলো।
জাঁদরেল চেহারার মাজিদিকে দেখলে কে বুঝবে এই ভদ্রলোক তার জীবনে এতগুলো প্রগাঢ় জীবনবোধসম্পন্ন সিনেমা বানিয়েছেন! বন্ধুতা, পরিবার, ভালোবাসা- মাজিদি'র সিনেমায় এসবের মরমি উপস্থাপন দুনিয়াজুড়ে দর্শকদের মোহিত করেছে। ইরানি সিনেমার ইতিহাসে মাজিদির আসন বেশ ওপরে। জিতেছেন অসংখ্য পুরস্কারও। শুধু দেশে নয়, দেশের বাইরেও তার শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতি মিলেছে। অস্কারের মঞ্চ পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছে মাজিদির শৈল্পিক সিনেমাবোধ।
মাজিদ মাজিদি। ছবি সৌজন্য: theweek.in |
আমাদের মা-বাবা'র পাঁচ সন্তান, কিন্তু একমাত্র আমিই সিনেমা নিয়ে আছি। সেই ১২ কি ১৩ বছর বয়সেই সিনেমা প্রসঙ্গে আমার আগ্রহ জন্মাতে শুরু করে। অভিনয়, শিল্পনৈপুণ্য এসব আমাকে মুগ্ধ করতো। ওসবের আকর্ষণে আমি আমার নিজের সৃষ্টিও শুরু করি। কলেজে নাটক ও থিয়েটার নিয়ে পড়াশোনা করি।
কিন্তু একটি রক্ষণশীল ইরানি পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ড মাজিদির সাফল্যের পথে কিছুটা বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়। দমে না গিয়ে একে একে সব বাঁধা উৎরাতে থাকেন মাজিদি।
আমার ক্যারিয়ারের পথটুকু আসলেই মসৃণ ছিল না। মানুষ শুধু আমার সাফল্যটাই দেখে। ভাবে মাজিদি বুঝি কোনো আলাদিনের চেরাগ পেয়ে রাতারাতি এভাবে বিখ্যাত হয়ে গেল।
অল্প বয়সেই স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছিলেন তিনি। স্কুল বা কলেজের খরচ জোগাতে তাকে হাড়ভাঙা খাটুনি খাটতে হয়েছিল। তার মতে, ওই দিনগুলো ছিল যুদ্ধদিনের মতো কঠিন। চিলড্রেন অভ হ্যাভেন বানানোর সময়ও অনেক কঠিন বাঁধা সামলাতে হয়েছিল মাজিদিকে। আত্মবিশ্বাসী এ মানুষটি বলেন, 'আমি জানি আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলাটা খুব সহজ, সহজেই হাল ছেড়ে দেওয়াটাও স্বাভাবিক। কিন্তু লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য কোথাও থামলে একদমই চলবে না।'
শিশুদের জন্য ভালোবাসা
মাজিদির সিনেমাগুলো জীবনপথের বিচিত্র অভিজ্ঞতা নিয়ে বানানো। আর বেশিরভাগই নিষ্পাপ, সরল শিশুদের দৃষ্টিতে দেখা জীবনবোধ। তার অনেকগুলো সিনেমায় আমরা বালকের অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে দুনিয়াটা দেখি। কিন্তু কেন? কারণ মাজিদি মনে করেন-
শিশুদের দুনিয়া হলো পবিত্র, অকপট। আপনি যা বলবেন তারা সেটাই বিশ্বাস করবে।' তাদের এই সারল্য বড়দের মনের ওপর দাগ কাটবে, আর এ জিনিসটাই আমি সবসময় প্রকাশ করতে চাই।
তবে তার সিনেমার জন্য শিশুশিল্পী খোঁজাটা বেশ কাঠখড় পোড়ানোর কাজ বলেই স্বীকার করেছেন মাজিদ মাজিদি। এই যেমন চিলড্রেন অভ হ্যাভেন-এর জন্য ইরানের হাজার হাজার স্কুলশিক্ষার্থীদের থেকে শিল্পীদের বাছাই করতে হয়েছিল। প্রায় চার মাসের গরুখোঁজা করে তবেই না মনের মতো শিল্পী পেলেন!
সংশোধিত ও পরিমার্জিত*
No comments