একবসাতে দেখেছিলাম 'অপুত্রয়ী': মার্টিন স্করসেজি
দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-এ লেখা এক নিবন্ধে সত্যজিৎ রায়ের প্রতি নিজের ভালোবাসা জ্ঞাপন করেছেন অস্কারজয়ী পরিচালিক মার্টিন স্করসেজি।
সিনেমার ইতিহাস অপেক্ষাকৃত ক্ষুদ্র। আর এই ছোট ইতিহাসের পাতা থেকে যাদের নামগুলো আমাদের সকলের জানা দরকার, তাদের মধ্যে একজন হলেন সত্যজিৎ রায়। শুধু নাম জানা নয়, তার সিনেমাগুলোও আমাদের সবার দেখা দরকার। একবার, দুবার নয়, বারবার দেখা দরকার। আর খুব ঘনঘনই আমি তার সিনেমাগুলো দেখতে বসে যাই।
মার্টিন স্করসেজি। ছবি: esquireme.com |
জ্যঁ রেনোয়া'র ফিল্ম দ্য রিভার বের হয় ১৯৫১ সালে। সত্যজিৎ রায় সিনেমাটির লোকেশন খুঁজে দিতে পরিচালককে সাহায্য করেছিলেন। দ্য রিভার আমাদের কাছে একেবারে ভিন্নরকমের অভিজ্ঞতা ছিল। সিনেমাটি বানানো হয়েছিল ইন্ডিয়ার প্রতি, বাঙালি সংস্কৃতির প্রতি এক নিগূঢ় ভালোবাসা থেকে। কিন্তু সিনেমার মূল চরিত্রগুলোতে যারা অভিনয় করেছিলেন তারা হয় ইংরেজ নয়তো আমেরিকান ছিলেন (শুধু মেলানি চরিত্রটিতে রাধা বার্নিয়ের অভিনয় করেন)।
সত্যজিৎ রায়। ছবি সৌজন্য নিমাই ঘোষ |
ম্যানহাটনের এক প্রেক্ষাগৃহে আমি একবসাতেই পথের পাঁচালী, অপরাজিতা, আর অপুর সংসার দেখে ফেললাম। চমৎকৃত হলাম সিনেমাগুলোর শ্রেষ্ঠত্বে। পথের পাঁচালীতে অপু'র চোখজোড়ার সেই অনিন্দ্য ক্লোজ-আপ শটটি, বা রবি শঙ্করের সঙ্গীতের সহসা গুরুরাগের সাথে তাল মিলিয়ে কাট- আমার কাছে সেগুলো ছিল সিনেমা হলে পাওয়া অনুধাবনের মূহুর্তগুলোর অন্যতম অভিজ্ঞতা। একজন চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে এই মুহূর্তগুলো আমার নিকট এক বিশেষ অন্তর্নিহিত স্থায়ী প্রভাব রেখেছিল। আর এই ত্রয়ীটা তো সিনেমার ইতিহাসের একজন প্রাতঃস্মরণীয় ব্যক্তির কেবল শুরু ছিল।
আমাদের সকলকে সত্যজিতের সিনেমা দেখতে হবে। একবার দেখলে আবার দেখতে হবে, বারবার দেখতে হবে। সত্যজিতের সার্বিক কাজগুলো আমাদের সিনেমার মহামূল্যবান সম্পদের একটি বিশেষ অংশ।
No comments