সামাজিক যোগাযোগ গবেষণায় ইন্টার্নাল ভ্যালিডিটি ও আর্টিফ্যাক্ট
সামাজিক যোগাযোগ গবেষণায় এর প্রতিটি ধাপ খুব সতর্কতার সাথে পরীক্ষা করে দেখতে হয় যেন কোনো প্রভাবক দ্বারা ওই ধাপগুলোর কাজ কলুষিত না হয়। এসব ধাপের কোনোটাতে যদি ভুল ব্যাখ্যা তৈরি হয় তাহলে পুরো গবেষণাটিই মূল্যহীন হয়ে পড়ে। আর প্রতিটি ধাপের সঠিক অনুসন্ধানকে বলা হয় ইন্টার্নাল ভ্যালিডিটি। যেসব বহিঃস্থ (extraneous) চলকের কারণে একটি গবেষণার ইন্টার্নাল ভ্যালিডিটি নষ্ট হতে পারে সেগুলোকে আর্টিফ্যাক্ট (artifact) বলে। একজন গবেষক যেসব আর্টিফ্যাক্ট-এর মুখোমুখি হতে পারেন সেগুলোর কয়েকটির ব্যাখ্যা এখানে দেওয়া হলো।
Image Source: africmil.org |
History: একটি গবেষণা চলাকালীন সময় এমন কিছু ঘটনা ঘটতে পারে যা গবেষণার ফলাফলটিকে বদলে দিতে পারে। ধরা যাক, কোনো একটি পত্রিকার জনপ্রিয়তা নিয়ে গবেষণা করা হচ্ছে। গবেষণা চলাকালীন সময়ে ওই পত্রিকা এমন কোনো সংবেদনশীল সংবাদ ছাপাল যার জন্য জনমনে রোষের সৃষ্টি হলো। তার ফলে পোস্ট-টেস্ট করার পর দেখা গেল ওই পত্রিকার জনপ্রিয়তা অবিশ্বাস্য ও অপ্রত্যাশিতভাবে কম। এখানে আর্টিফ্যাক্ট হিসেবে কাজ করেছে পত্রিকাটি কর্তৃক ছাপানো সংবেদনশীল সংবাদটি। আর্টিফ্যাক্ট হচ্ছে সিনেমার ম্যাকগাফিনের (McGuffin) মতো, কেউ জানে না জিনিসটা কি, কিন্তু এই বস্তুটিই গবেষণার ফলাফলকে অন্য দিকে নিয়ে যায়।
Maturation: গবেষণাকালীন সময়ে সাবজেক্টের দৈহিক ও মানসিক বৈশিষ্ট্য বদলাতে পারে যা গবেষণার ফলাফলের ওপর প্রভাব ফেলে।
Testing: সব সাবজেক্টের ওপর একই ধরনের প্রি-টেস্ট ও পোস্ট-টেস্ট করা যাবে না। কারণ তা হলে গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্য প্রভাবিত হতে পারে।
Instrumentation: সময়ের সাথে সাথে গবেষণা প্রক্রিয়া বা কৌশলসমূহ দুর্বল, কম কার্যক্ষম হয়ে যেতে পারে।
Statistical regression: একই সাবজেক্টের ওপর একাধিকবার টেস্ট করে হলে ফলাফল ভিন্ন হতে পারে।
Experimental mortality: গবেষণার মাঝপর্যায়ে সাবজেক্ট হারিয়ে যেতে পারে যা গবেষণার ফলাফলের ওপর প্রভাব রাখে।
Sample selection: গবেষণায় নমুনা সংগ্রহ নিয়মমাফিক না হলে ফলাফল অবশ্যই নির্ভুল হবে না।
Demand characteristics: সাবজেক্ট যদি গবেষণার উদ্দেশ্য ধরে ফেলে তাহলে নিজে থেকেই ‘ভালো’ তথ্য সরবরাহ করে। ফলে গবেষণাটি আর গবেষণা থাকে না।
Experimenter bias: শুধু সাবজেক্ট নয় এমনকি কখনো কখনো খোদ গবেষকই তার গবেষণার ওপর প্রভাব ফেলতে পারেন। অব্জারভেশন, ডাটা সংগ্রহ, গানিতিক হিসেবনিকেশ, ফলাফল ব্যাখ্যা ইত্যাদি কাজে গবেষক একপেশে আচরণ করলে গবেষণা ভণ্ডুল হয়ে যায়। আবার প্রাইভেট বা কর্পোরেট গবেষণায় কর্তৃপক্ষের ইচ্ছা গবেষকের ওপর চাপিয়ে দিলে গবেষক স্বভাবতই নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কাজ করতে পারেন না।
Evaluation apprehension: গবেষণা পরীক্ষা সম্পর্কে সাবজেক্টের মনে ভয় কাজ করলে পরীক্ষায় অশুদ্ধ ডেটা লাভ হতে পারে।
Diffusion or imitation of treatments: ফোকাস গ্রুপের ক্ষেত্রে যদি একটি নমুনা দল অন্য দলের সাথে গবেষণাটি নিয়ে ভাব বা তথ্যের আদানপ্রদান করে তাহলে গবেষণা প্রকল্পটি দূষিত হতে পারে।
Compensatory rivalry: কন্ট্রোল গ্রুপে থাকা সাবজেক্ট নিজের গ্রুপ সম্পর্কে জানতে পারলে তার ভেতর এক্সপেরিমেন্টাল গ্রুপকে হারানোর মনোভাব তৈরি হয় এবং ফলাফল ভিন্ন হয়।
Demoralization: এক্সপেরিমেন্টাল গ্রুপে না থাকতে পেরে কন্ট্রোল গ্রুপের সদস্য কখনো কখনো গবেষণা বিষয়ে আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারে।
কৃতজ্ঞতা: Mass Communication Research: An Introduction by Roger D. Wimmer, and Joseph R. Dominick
No comments