Header Ads

Header ADS

দৌর্মনস্য

দুঃখের দিনে দুঃখের কথা পড়তে নেই। পড়লে আরও দুঃখিত হতে হয়। কী প্রয়োজন? নাকি প্রয়োজন আছে? বিভূতিবাবুর চাউল পড়লুম, থুপির জন্য বিষাদ জেগে ওঠলো। ওদিকে ভন্ডুলমামাও যে এত যত্নআত্তিতে গড়া বাড়িটাতে মরে পড়ে রইলেন, তার জন্যেও বিস্তর আফসোস হলো। তা-তে আমার দুঃখ বাড়লো কি কমলো, তা ঠিক হিসেব করে ওঠা গেল না।

intrapersonalism logo

দুঃখটা আপেক্ষিক। সেদিন একজনকে লিখতে দেখলুম ছোটখাটো দুঃখ দুঃখই নয়। কতজন না খেতে পেয়ে মরে হেজে যাচ্ছে, রাজ্যের মানুষ নিয়ত ঠকচে, কারও বা শরীরে বিষম ব্যামো, কেউ মায়ের চিকিৎসার জন্য নিয়মিত জনে জনে হাত পাতছে; তাদের দুঃখের কাছে আপনার মনের দুঃখ তো নস্যি। কিন্তু ব্যাপারটা কি তা-ই? অন্যের বড় দুঃখের জন্য আমার ছোট দুঃখটাকে ফেলে দেব? তাহলে তো আমার কোনোদিন সুখই জুটবে না! দুঃখ না থাকলে সুখ আবার হয় কী করে!

আমার জর্মন ফ্রেন্ডটাকে বলতে গেছিলুম দুঃখের কথা। তারপর মনে হলো, শুধু শুধু বেচারিকে এসব বলে হাপিত্যেশ করিয়ে লাভ কী। তার চে' বরং বলে দিই আমাকে নিয়ে বিশেষ উদ্বিগ্ন হতে হবে না। সেটা বলতেই সে কৌতুহলভরে জিজ্ঞেস করলো, তোমাদের ওদেশে কি মনের দুঃখ আজও ট্যাবু হয়ে আছে?

আছে বৈকি। আবার ভালো লোকও আছে যারা ওই দুঃখের কথা শোনে। কিন্তু সেরকম লোক পাওয়া ভারি মুশকিল। তাও যদি একজন-দুজনকে পাওয়া যায়, তাদেরকে আর কত বারই বিরক্ত করা যায়! তাই দুঃখটাকে নিয়ে কোনোরকম এই আশায় বসে থাকতে হয়, কয়দিন পর আপনা থেকেই চলে যাবে। সেই চলে যাওয়ার দিনটা যেন আর আসতেই চায় না! কিন্তু এলেও বা লাভ কী। সেই তো অল্পদিনের জন্য। তারপর আবার হুট করে দুঃখ এসে হাজির হবে।

-ঝুলবারান্দা, ৭০০৯, জগন্নাথ হল
১ বৈশাখ, ১৪২৯

No comments

Theme images by alacatr. Powered by Blogger.